স্টাফ রিপোর্টার:
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগড়া-নোয়াপাড়া গ্রামে বিএনপি নেতা ওয়াদুদ রনি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জমি দখল, দোকানে হামলা, নারীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, প্রাণনাশের হুমকি, এবং রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহারের অভিযোগে এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে, তারা শুধু বারবার নির্যাতনের শিকারই হননি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সহযোগিতার পরিবর্তে ঘুরানো হয়েছে এবং ভয় দেখানো হয়েছে ‘মাদকের মামলা’ দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ,
অত্যাচারের মাত্রা ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে অবশেষে ভুক্তভোগী পক্ষ কুমিল্লা বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পক্ষে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র ও এজাহারের সত্যায়িত অনুলিপি আমাদের প্রতিনিধির হাতে এসেছে, যেখানে অভিযুক্ত হিসেবে বিএনপি নেতা ওয়াদুদ রনি, ইউপি সদস্য মামুন মেম্বারসহ আরও কয়েকজনের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শারমিন ও শিরিন আক্তার সহ আরও কয়েকজন নারীর রক্তাক্ত ছবি আমাদের হাতে এসেছে, যেগুলো ঘটনার ভয়াবহতা ও পৈশাচিকতার প্রমাণ বহন করে।ছবিতে দেখা যায়—নারীদের মাথা, মুখ, হাতসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। এছাড়া দোকানের ভাঙচুরেরও ভিডিও ও স্থিরচিত্র রয়েছে।
নারীদের গায়ে হাত তোলা, গালিগালাজ, বাজারে প্রকাশ্যে হামলা হুমকি ,
ভুক্তভোগী শারমিন বলেন—“ওরা এসে বললো, ‘এই জায়গা আমাদের, বের হয়ে যা।’ আমরা বাধা দিলে ওরা আমার আর আমার মেয়ের গায়ে হাত তোলে, কিল-ঘুষি মারে। বাজারের লোকজন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, কেউ কিছু বলতে সাহস করে না। পরে হুমকি দেয়—‘বিএনপি করি, মামলা করলেও কিছু হবে না।’”
পুলিশ তদন্তে এলেও প্রতিকার মেলেনি, উল্টো হুমকি একপর্যায়ে থানার এসআই জাহাঙ্গীর ফোর্সসহ এসে সিভিল পোশাকে তদন্ত করলেও ফল মেলেনি। বরং তার পরই আবারও হামলা হয়, এবং ভুক্তভোগীদের বলা হয়—‘মাদকের মামলা দিয়ে চালান দিব।’
জমি দখলের অভিযোগে একাধিক পরিবার উচ্ছেদ ,স্থানীয়রা জানান, ওয়াদুদ রনি ও তার অনুসারীরা রাতের আঁধারে জমি দখল করছেন। কেউ চাষাবাদ করলেও ‘ভুয়া কাগজ’ দেখিয়ে উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক নারী বলেন,
“আমার স্বামীর জমিতে কাজ করছিলাম, ওরা এসে বললো এই জমি তাদের। তুলে দিয়ে গালিগালাজ করে বলে, ‘বিএনপি করি, কিছু করতে পারবি না।’”
এ ঘটনায় বাজারের সিসিটিভি ও মোবাইল ফুটেজে দেখা গেছে—ওয়াদুদ রনির অনুসারীরা একাধিক নারীকে গালিগালাজ ও গায়ে হাত দিচ্ছে। এই ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
কেউ কেউ মন্তব্য করেন—“এখনই যদি এমন করে, ক্ষমতায় গেলে তো নারীরা ঘর থেকেও বের হতে পারবে না।”
থানার ওসি বলছেন, অভিযোগ পাননি; ভুক্তভোগীরা বলছেন, তারা ফিরিয়ে দিয়েছেনব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি আবুল হাসান বলেন,“এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।”কিন্তু ভুক্তভোগী শারমিন বলেন “আমরা রক্তাক্ত অবস্থায় গিয়েছিলাম, ওরা বলেছে আগে চিকিৎসা নেন, পরে মামলা নেবো। পরে আর কেউ কথা বলেনি।”
নারী-শিশুর নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রশ্নের মুখে ,একজন মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন,“আমার মেয়েকে বাজারে মারধর করে রক্তাক্ত করলো, আর কেউ কিছু বললো না? দেশে কি আইন নাই? আমরা কি সাধারণ মানুষ হয়ে বাঁচতে পারবো না?”এই ঘটনায় শুধু নারী নির্যাতন নয়, বরং রাষ্ট্রের আইন ও বিচার ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা নষ্ট হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
প্রশাসন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি স্থানীয় সচেতন মহল বলছে,একাধিক ভিডিও, প্রত্যক্ষদর্শী, রক্তাক্ত ছবি, এবং আদালতে দায়ের করা মামলার নথি থাকা সত্ত্বেও যদি এখনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়—তা হলে এ দায় প্রশাসনেরও থাকবে। তারা অবিলম্বে
মামলার দ্রুত তদন্ত,অভিযুক্তদের গ্রেফতার,ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার তদন্ত দাবি করেছেন।
প্রমাণাদি সংক্ষেপে: কুমিল্লা আদালতে দায়েরকৃত মামলার কপি (প্রতিনিধির হাতে) ,রক্তাক্ত ভুক্তভোগীদের ছবি ,ভিডিও ফুটেজ যেখানে নির্যাতনের দৃশ্য স্পষ্ট,স্থানীয়দের সাক্ষ্য, থানায় অভিযোগ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার বর্ণনা
Leave a Reply