সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে গেল ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত প্রায় হয়নি বললেই চলে। মাত্র ০০৪.০ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও মেঘালয়ের অন্যান্য স্থানেও উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। এদিকে সুনামগঞ্জেও তেমন ভারী বর্ষণ না হওয়ায় সুরমা, যাদুকাটা, সোমেশরী নদীর পানি কমেছে। গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ২৫. মি.মি ও ছাতকে ১৮ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় ৬.৮৯ সে.মি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল সুরমার পানি। সোমবার সকাল ৬ টায় ৩ সে.মি কমে পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ৬.৮৬ সে.মি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বিপদসীমার ০.৯৪ সেন্টিমিটার নিচ রয়েছে। এছাড়াও সকাল ৬টায় লাউড়েরগড়ে যাদুকাটা নদীর পানি ৬.২৫ সে.মি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছেল, যা বিপদসীমার ১.৮ সে.মি নিচে রয়েছে। তবে দিরাইয়ে সুরমা নদীর পানি ০৬ সে.মি বেড়ে ৫.৫১ সে.মি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছেল, যা বিপদসীমার ১.০৪ সে.মি নিচে রয়েছে। সোমেশ^রী নদীর পানি ১০.৮৭ সে.মি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপদসীমার ২.৩৩ সে.মি নিচে রয়েছে।
এদিকে রবিবার (১ জুন) সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতির জরুরি খবর আদান—প্রদান এবং জনগণের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের ২০৪ নম্বর কক্ষে (২য় তলা) নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ—সহাকারী প্রকৌশলী (অ:দা) শুভ দেবনাথ (মোবা: ০১৭৯৫—৫০৭১৩৭), উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের উপ—প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহীন আলম (মোবা: ০১৭২১—৪৮২০৮০) ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. সাজু মিয়া (মোবা: ০১৭২১—৫১২১১৬) দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে গত ৩১ মে তাহিরপুরে তাহিরপুরে বন্যা পরিস্থিতি ও সতর্কতা অবলম্বনে ৭টি ইউনিয়নে ৩৯টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতকীর্করণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী দুইদিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে মেঘালয় এক্সপ্রেস আজ সোমবার (২ জুন) ‘৫ দিনে রাজ্যে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে’ শিরোনামে পত্রিকায় লিড নিউজ করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) গত পাঁচ দিনে মেঘালয়ের উপর অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে। রাজ্যের উচ্চ বৃষ্টিপাতের অঞ্চল যেমন সোহরা (চেরাপুঞ্জি) এবং মাওসিনরামে এই সময়কালে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে— যথাক্রমে ৭৯৬ মি.মি এবং ৭৭৪.৫ মি.মি। এক সপ্তাহ আগে আঘাত হানা প্রথম মৌসুমী বৃষ্টি এবং ঝড়ে এখন পর্যন্ত সাত জনের প্রাণহানি হয়েছে। মধ্য খাসি পাহাড়ের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, এরমধ্যে একজন ১৪ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে, পশ্চিম গারো পাহাড়ে ৭ ও ১৩ বছর বয়সী দুই শিশু এবং পশ্চিম খাসি পাহাড় ও রি—ভোই জেলায় এক জন করে মারা গেছে। রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এমএসডিএমএ) জানিয়েছে, ২৩টি ব্লক এবং ১০টি জেলার ৪৯টি গ্রামে ১,০০০—এর বেশি মানুষের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়াও ২৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রাজ্যের ৩৩টি অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।###
Leave a Reply