গোলাম আলী নাইম ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধি:
গুলিস্তানে যে সমস্ত খাবার হোটেলে গরুর গোস্ত রাখেনা তারা ভারত ও হিন্দুবাদীদের দালাল। এদের বয়কট করতে হবে
-মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদ
“গুলিস্তানে যে সমস্ত খাবার হোটেলে গরুর গোস্ত থাকেনা, সেই সমস্ত খাবার হোটেলগুলো হিন্দুত্ববাদীদের দালাল; তাদেরকে বর্জন করুন”- এমন দাবীতে সমাবেশ করেছে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদ নামক একটি সংগঠন। আজ ২রা জানুয়ারী, ২০২৫, রোজ-বৃহস্পতিবার, রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানে হযরত গোলাপ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি মাজার শরীফ সংলগ্ন হোটেল রাজধানী, হোটেল নিউ রাজধানী ও হোটেল রাজের সামনে তারা এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে তারা প্রত্যেকটি খাবার হোটেলে বাধ্যতামূলক গরুর গোশত রাখার দাবী জানান। অন্যথায় এসব হোটেল বন্ধ করে দেয়ার দাবী জানান।
সমাবেশে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্থাৎ শতকরা ৯৮ জন মানুষ হচ্ছেন মুসলমান। মুসলমানরা খাবার হোটেলে গরুর গোশত খেতে চায়। কিন্তু গরুর গোশতের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও গুলিস্তানের হোটেল রাজধানী, নিউ রাজধানী বা হোটেলে রাজ কর্তৃপক্ষ হিন্দুত্ববাদীদের কথা বলে হোটেলে গরুর গোশত রাখে না। এতে মুসলিম ভোক্তারা প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হিন্দুত্ববাদীদের কথা চিন্তা করে হোটেলকে গরুর গোশত না রাখা একটি জঘন্য অপরাধ ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের খাদ্য অধিকার হরণ।
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারতে প্রতিনিয়ত গরুর গোশতের জন্য মুসলমানদের নির্মমভাবে শহীদ করা হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখার পরও যে সব হোটেল মালিক হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ নিয়ে তাদের হোটেলে গরুর গোশত রাখে না, তারা ভারতের উগ্রহিন্দুবাদীদের দালাল ও বিজেপির এজেন্ট। তারা বাংলাদেশকে ভারত বানাতে চায়। হিন্দুত্ববাদী পরিবেশ তৈরী করতে চায়, যেখানে গরুর গোশত নিষিদ্ধ বলে সবাই জানবে।
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, মুসলিম নাম দিয়ে হোটেল খুললেও এদের অনেক স্টাফ হিন্দুত্ববাদী, যারা গরুর গোবর বা চনাকে পবিত্র মনে করে। হিন্দু কাস্টমার যেহেতু তাদের মূল টার্গেট তাই এদের খাবারে গো-চনা মিশ্রিত থাকলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, গরুর গোশত খাওয়া ফরজ নয় তবে দ্বীন ইসলামের শিয়ার বা নির্দশন। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আকিদার বিষয়টি যখন আসবে, তখন গরুর গোশত খাওয়া ঈমানের অঙ্গ হওয়ার কারণে ফরজ হয়ে যাবে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা বাকারার ২০৮ নম্বর আয়াত শরীফের শানে নুযূল বলা হয়েছে- বিশিষ্ট ছাহাবী আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু পূর্বে ইহুদী ধর্মের অনুসারী ছিলেন। ইহুদীরা উটের গোশত খায় না। সে কারণে আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু কখনও উটের গোশত খান নাই। যেহেতু তিনি উটের গোশত কখনও খান নাই সেহেতু ঈমান এনে মুসলমান হওয়ার পর উটের গোশত খাওয়া উনার জন্য বিব্রতকর ছিলো। তিনি একদিন বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমিতো কখনো উটের গোশত খাই নাই, আমাকে উটের গোস্ত না খাওয়ার অনুমতি দিন। এসময় আল্লাহ পাক ওহী নাজিল করলেন- “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (সূরা বাক্বারা শরীফ : ২০৮) অর্থাৎ যদিও উটের গোশত খাওয়া ফরজ নয়, কিন্তু এ আয়াত শরীফ অনুসারে, ইহুদী ধর্মের বিষয়টি যখন সামনে আসছে, তখন উটের গোশত একজন মুসলমানের জন্য ফরজ হয়ে গেছে, ঈমানের অঙ্গ হয়ে গেছে। তেমনি গরুর গোশত খাওয়া ফরজ নয়। ঠিক তেমনি হিন্দু ধর্মের আকিদার বিষয়টি যখন আসে, তখন মুসলমানদের জন্য গরুর গোশত খাওয়া ফরজ হয়ে যায়, ঈমানের অঙ্গ হয়ে যায়। তাই হিন্দু তোষণের উদ্দেশ্যে কোন খাবার হোটেল মালিক যদি গরুর গোশত না রাখে, তবে সে কুফরী করবে। কারণ সে গরুর গোস্তকে ইহানত করেছে শিয়ারুল ইসলাম হওয়ার পরও। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার শিয়ার (নির্দশন) সমূহকে ইহানত বা হারাম করো না ” (সূরা মায়েদা শরীফ : ২) এজন্য তাকে তওবা করতে হবে, নয়ত সে ঈমানহারা হয়ে মারা যাবে। কবরে ফিরিশতা এদের দ্বীন সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তারা ‘দ্বীন ইসলাম’ বলতে পারবে না, তাদের দ্বীন ‘হিন্দু ধর্ম’ বলবে, কারণ এরা হিন্দুদের কথা চিন্তা করে মুসলমানদের গরুর গোশত থেকে বঞ্চিত করেছিলো।
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, ইউরোপ-আমেরিকায় ইহুদী খ্রিস্টানরা মুসলমানদের কথা বিবেচনা করে কখনই হোটেলে হালাল খাবার রাখে না। বাধ্য হয়ে মুসলমানরা নিজেদের জন্য পৃথক হালাল হোটেল খুলে। হিন্দুদের যদি প্রয়োজন হয়, তবে তারা নিজেদের জন্য হিন্দু নাম দিয়ে পৃথক হোটেল খুলুক, কিন্তু মুসলিম হোটেলে হিন্দুদের জন্য মুসলমানদের বঞ্চিত করে তারা গরুর গোশত বন্ধ রাখবে এমনটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তাগণ বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা করতে হলে খাবার হোটেলগুলোকে বাধ্যতামূলক গরুর গোশত রাখতে হবে। হোটেলে গরুর গোশত থাকা প্রমাণ করবে ঐ হোটেল মালিক ভারত কিংবা হিন্দুত্ববাদীদের দালাল নয়। যদি কোন হোটেলে একটিও গরুর গোশতের তরকারী না থাকে, তবে সে হোটেলটি হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় হোটেল ও ভারতের দালাল বলে প্রমাণিত হবে। সেই হোটেলটিকে সারা দেশব্যাপী বর্জনের ডাক দেয়া হবে।
সমাবেশে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের কয়েকশ’ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply