হাফিজুর রহমান, (কয়রা প্রতিনিধি)
খুলনার কয়রা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিগত সরকারের ইউপি চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) উপজেলার ৪ নং কয়রা গ্রামের মোঃ নুরুল ইসলামের পূত্র মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (৩৮) বাদি হইয়া কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেড আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা সংস্থার উপর ন্যস্ত করেছেন বলে জানা গেছে।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন- এস এম লুৎফর রহমান (৩৮), অহিদ মোড়ল (৫৫), জিয়াদ আলী সরদার (৫৫), মিজানুর রহমান (৪৫), তৌফিকী হান্নান (৪২), আলামিন (৩৫), আছাফুর মোড়ল (৩৭), বিজয় সরদার (৫০), লিটন মোড়ল (৪০) সহ অজ্ঞাত আরো ৭০/৮০ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় আসামীদের একমাত্র কাজই ছিল এলাকার নিরীহ-নিপীড়িত ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন সময়ে হয়রানি,চাঁদাবাজি, হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্পত্তি ও টাকা আত্মসাৎ করা এবং এলাকা ছাড়া করা। অপরদিকে বাদী একজন নিরীহ, সহজ, সরল, ব্যবসায়ী ও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।
মামলার এজাহারে আরো জানা যায়- বাদী ৪ নং কয়রা সুন্দরবন যুব সংঘ ক্লাবের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।আসামীগণ উক্ত ক্লাব ঘরটি দখল ও সুন্দরবনে অবৈধভাবে ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিলে বাদী সহ ক্লাব ঘরের সদস্যবৃন্দ বাধা দিলে আসামীগণ বাদীকে এই বলে যে, “তুই এবং তোর পরিবার এলাকায় থাকিতে চাইলে এবং ব্যবসা করতে চাইলে মাসে ২০০০০/( বিশ হাজার টাকা) চাঁদা দিতে হবে এবং আমাদের কাজে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবি না”।
বাদী অত্যান্ত অসহায় জীবন যাপন করিলেও আসামীদের দাবিকৃত চাঁদা পূরণ করার পরেও তাদের চাঁদার পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকে, ফলে বাদী তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি এবং অপারগতা প্রকাশ করিলে আসামীগণ বাদীকে অবৈধ বল প্রয়োগ করে জীবনের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি অব্যাহত রাখে এবং বড় ধরণের ক্ষতিসাধনের জন্য ওতপেতে থাকে।
সেই সূত্র ধরব বিগত ইং ১২/০১/২০১৩ তারিখে সময় বিকাল আনুমানিক ৩ঃ৩০ ঘটিকায় বাদী এবং সাক্ষীগণ ক্লাবে থাকাকালীন সময়ে আসামীগণসহ অজ্ঞাত্নামা আরো ৭০/৮০ পূর্ব পরিক্লপনামাফিক আগ্নেয়াস্ত্র,ধারালো ছুরি,রাম দা,লোহার রডসহ অন্যান্ন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে বেআইনিভাবে ক্লাব ঘরে প্রবেশ করিয়া ০১ নং আসামী এই বলে হুকুম প্রদান করে যে, “শালাকে আজ জীবনে শেষ করে দে,আমাদের চাঁদা না দেয়ার সাধ মিটায় দে,ক্লাব ঘর ছেড়ে না দেয়ার সাধ মিটায় দে,আমাদের কাজে বাধা প্রদান করার সাধ মিটায় দে”।
১ নং আসামীর হুকুম পাওয়া মাত্র আসামীদের মধ্যে দুইজন বাদীর গলার রশি দিয়ে দুই দিকে টান দিয়ে শাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। মামলার ৩ নং আসামী বাদীর তলপেটে সজোরে লাথি মারে।ইহাতে বাদী দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুর উপক্রম হয়। তখন ১ নং আসামী পূণরায় হুকুম প্রদান করে যে ” শালা এখনও মরেনি?, শালাকে এখনি শেষ করে দে”। হুকুম পাওয়া মাত্র ২ নং আসামী বাদীর গলায় পা চেপে ধরে হত্যাচেষ্টা করে।
৪ নং আসামী তার হাতে থাকা রড দিয়ে বাদীকে প্রাণে শেষ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করিলে বাদীর ঘাড়ের উপরের অংশে লাগিলে বাদী গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ২ নং আসামী বাদীর গলায় ধারালো ছুরি ধরে বলে যে, “তোর কোথায় কত টাকা আছে এখনি বল”,
বাদী বলে- “আমার কাছে নগত ৫০০০/( পাচ হাজার টাকা) ছাড়া আর কোন টাকা নেই”, তখন ২ নং আসামী অন্যান্ন আসামীদেরকে বলে যে, “এর কাছে যা যা আছে সব লুটপাট করে নে,শালা নড়লে গলায় ছুরি চালিয়ে শেষ করে দিব”।
বাদী জীবনের ভয়ে তটস্থ হইয়া চিৎকার করিলে ১ আসামী বাদীর গলায় পূণরায় ধারালো ছুরি ধরে বলে যে, ” তোর কাছে যা আছে দিয়ে দে” বলিয়ে বাদীর বুক পকেটে থাকা নগত ৫০০০/ (পাচ হাজার টাকা) জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং ২নং আসামী এক স্বাক্ষীর হাতে থাকা স্যামসাং মোবাইল ফোন যার মূল্য (২০০০০) টাকা সেটি ছিনিয়ে নেয়, অন্যান্ন আসামীগণ বাদী এবং বাদীর মাকে মারপিট করে মারাত্মক জখম করে থাকে।
অদ্য বাদী আসামীদের নামে মামলা দায়ের করে সুবিচার পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply