হাফিজুর রহমান:
যৌন ব্যবসার অন্তরালে সমাজের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ কর্মকর্তা ,রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সমাজের নানান শ্রেণী পেশার ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফোনালাপের মাধ্যমে সাতক্ষীরায় ভাড়া বাসায় কাদের-রিমার মধু কুঞ্জের ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে কল গার্লের সঙ্গে বিকৃত নগ্ন করে বেধড়ক পিটিয়ে ভিডিও ধারণ। ঐ ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিএনপি নেতা ও রিপনুজ্জামান রিপন নামে ১ সাংবাদিকের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে এবং নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে থানায় মামলা দায়ের করেছে ওই ভুক্তভোগী সাংবাদিক। গত মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৫ টা হতে রাত ১০ টা পর্যন্ত সাতক্ষীরার সদর থানার কাটিয়া লস্কার পাড়ার আশরাফের ভাড়া বাড়িতে ইউ,পি সদস্য কাদের ও তার কথিত স্ত্রী পতিতা সর্দারানী রিমার মধু কুঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় ভুক্ত ভোগী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের গনপতি গ্রামের ফজর আলীর পুত্র এবং মথুরেশপুর ইউনিয়ন জিয়া পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক সাতক্ষীরার সকাল পত্রিকার মথুরেশপুর ইউনিয়ন প্রতিনিধি রিপনুজ্জামান রিপন (৩২) সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় ৫ এপ্রিল রাতে ৪ জন নামীয় এবং ২/৩ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি, চাঁদাবাজী,দুষ্যতা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে ১টি মামলা দায়ের করেছে । ঐ চক্রটি এর আগেও ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল হাফিজুর রহমান নামে এক সাংবাদিককে জোর করে ধরে নিয়ে একটি হোটেলে মারপিট ও জামাকাপড় ছিড়ে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় এই কাদের- রিমা চক্রের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় পর্নোগ্রাফি , চাঁদাবাজির মামলায় আটক করে। মামলার আসামিরা হলো কালিগঞ্জ থানার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দ মধুসূদনপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের কন্যা ১ সন্তানের জনক স্বামী পরিত্যক্তা শারমিন আক্তার রিমা এবং তার কথিত স্বামী পরিচয়দানকারী একই গ্রামের এলাহি বক্স গাজীর বিবাহিত পুত্র ১ সন্তানের জনক বহু বিবাহের নায়ক ইউ,পি সদস্য ও সাবেক জাতীয় পার্টির প্রয়াত প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের একান্ত সচিব খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের দোসর এইচএম গোলাম রেজার ঘনিষ্ঠ ভাজন আব্দুল কাদের (৩৫) ,দেবহাটা থানার পুষ্পকাটি গ্রামের আব্দুর রউফ এর পুত্র বিএনপি নেতা বাবলুর রহমান (৫০) এবং সাতক্ষীরা সদর থানার কথিত সাংবাদিক ফজর আলী (৫০)। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর থানার সহকারী উপ পরিদর্শক আব্দুল জব্বার এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় ভুক্তভোগী পুলিশ সুপার বরাবর পৃথক আরো ১টি অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগ। মামলার বিবরণে ও ভুক্তভোগী রিপনুজ্জামান রিপন সাংবাদিকদের জানায় কালিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী নাজিমগঞ্জ বাজারে তার মালিকানাধীন চায়না বাংলা কসমেটিক্স নামে একটি দোকান আছে। সেই সুবাদে গত ৬ মাস আগে দোকানে বেচাকেনার সময় শারমিন আক্তার রিমার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। সেই সূত্রে গত ১৭-৩-২৫ ইং তারিখে বিকাল ৪ টার দিকে রিপনুজ্জামানের দোকান থেকে ৫,৫০০ টাকার মালামাল বাকিতে নেয় । উক্ত বাকি টাকা দেওয়ার জন্য গত ১ এপ্রিল সাতক্ষীরায় টাকা নেওয়ার জন্য যেতে বলে । বিকাল সাড়ে ৫ টা নাগাদ টাকা নেওয়ার জন্য কাটিয়া এলাকায় কাদের- রিমার ভাড়া বাসায় যায় ।ঐ সময় রিপনুজ্জামান রিপনকে ঘরে বসতে দিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পাশের ঘর থেকে ৫/৬ জনের একটি দল এসে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে এবং নগ্ন করে নগ্ন কলগার্ল দিয়ে নগ্ন অবস্থায় যৌনাঙ্গে মুখ লাগিয়ে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই সময় তাদের পিটুনি সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে ফোন করে স্বজনদের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে ২১ হাজার টাকা এবং তার কাছে রক্ষিত ৫০ হাজার টাকা তারা ছিনিয়ে নিয়ে উপস্থিত সদর থানার এ এস আই জব্বার মিলে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। এরপরে ও ৫ লক্ষ টাকা আদায়ের জন্য ৩ টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করিয়ে কাউকে না বলার অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর করিয়ে রাত ১০টার সময় ছেড়ে দেয়। বাহিরে এসে তার এক স্বজনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ সুপার মহোদয় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু থানায় পুলিশ কর্মকর্তাদের রহস্যজনক কারণে তারা কাদের -রিমা চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সমঝোতার নাম করে তাকে থানা থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মহোদয় বিষয়টি জানতে পেরে গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগীকে ডেকে সমঝোতার কাগজ উদ্ধার পূর্বক সদর থানায় মামলা করার নির্দেশ দেন। ওই সময় সমঝোতার কাগজে মূল হত্যা কাদেরকে কাইয়ুম নাম ব্যবহার করতে দেখা যায় ।কাদের রিমা এই চক্রের মধু কুঞ্জের ফাঁদে পড়ে অনেক সম্মানিত ব্যক্তি এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের নগ্ন মেলামেশার ভিডিও তাদের হাতে থাকায় তারা প্রতিনিয়ত এটাকে পুঁজি করে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে বছরের পর বছর ব্যবহার করে এই কারবার চালিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ শামিমুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে তালাবদ্ধ বাড়িছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply