পিসি দাশগুপ্ত, স্টাফ রিপোর্টারঃ
পুকুর পাড়ে সবজি ও দেশীয় ফলের চাষ করে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মাছ চাষীদের ভাগ্য বদলে গেছে। মাছ চাষের প্রায় ৪০ শতাংশ লাভ আসে পুকুরের সবজি ও দেশীয় ফলমূল চাষ করে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পুকুর পাড়ে মাছ চাষীরা সবজি ও দেশীয় ফলের আবাদ করেছেন। অধিকাংশ কৃষক ধানের জমিতে পুকুর তৈরি করে মাছের চাষে ঝুঁকছেন। এক সময় এক ফসলি জমিতে শুধু বোরো ধানের আবাদ হতো। এক দশকের ব্যবধানে উপজেলায় অনেক বাড়ি কিংবা এক ফসলি উঁচু জমিতে পুকুর খনন করে মাচের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন মাছ চাষীরা। এতে তাদের উৎপাদন বেড়েছে, অনেকেই দেখছেন লাভের মুখ। এসব সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পুকুর পাড় সহ আবাদযোগ্য কোন জমি যেন পতিত না থাকে সেজন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষক সহ মাছ চাষীদের উদ্বুদ্ধ করছেন। উপজেলার মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বাড়ির আঙ্গিনা, পুকুরপাড় সহ পরিত্যক্ত জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ পুকুর পাড়ে সবজি ও ফলের গাছ রয়েছে। গাছে গাছে সবজি ও ফল দুলছে। পুকুর পাড়ের মাচায় লাউ, কুমড়া, শসা, শিম সহ বিভিন্ন সবজি মাচায় ঝুলছে। আবার অনেক পুকুর পাড়ে কলা, আম, জলফুই, নারিকেল, পেঁপে জাম ও বিভিন্ন ধরনের ফল গাছে ফলমূল রয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয়াহালট গ্রামের মৎস্যচাষী মো. আব্দুল বাতিন জানান, আমার দুই একরের পুকুরের পাড়ে লাউ, পেঁপে, কলা, লেবু পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছি। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবো আশা করছি। পুকুরে মাছ চাষের ৪০ শতাংশ লাভ এসেছে সবজি বিক্রি করে।
মাছ চাষী সাইদুর রহমান জানান, পুকুর পাড়ে মাছ চাষের পাশাপাশি নারিকেল, কলা, বিভিন্ন ধরনের বড়ই সহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি। এতে তেমন খরচ হয় না, মাছের পাহারাদারই ফলমূল গাছের দেখাশোনা করে থাকে।
তিনি আরও জানান, যারা পুকুরে মাছ চাষ করেন তারা যদি প্রতিটি পুকুর পাড়ে বিভিন্ন সবজি চাষ করেন, তাহলে মাছ চাষের খরচ অনেকটাই সবজি থেকে আসবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা সুমন কুমার সাহা বলেন, আবাদযোগ্য সব জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি পুকুর পাড় যেন চাষবাদের আওতায় আনা যায় সেজন্য উপজেলার সকল উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।”
Leave a Reply