মোঃ শাহজাহান বাশার :
কুমিল্লার সীমান্তবর্তী বুড়িচং উপজেলায় বিজিবির গোপন তথ্যভিত্তিক সফল অভিযানে একটি সিএনজি-তে থাকা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গাঁজা উদ্ধার এবং একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে। সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি)-এর নিরবিচ্ছিন্ন টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতার অংশ হিসেবে এ অভিযানে আনুমানিক ৯ লক্ষ ৫ হাজার টাকা মূল্যের মাদক উদ্ধার করা হয়, যা এলাকার মাদকবিরোধী অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শনিবার (১০ মে ২০২৫) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে বুড়িচং উপজেলার সীমান্তবর্তী খারেরা বিওপি’র দায়িত্বাধীন এলাকায় অভিযানটি পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ জিয়াউর রহমান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযানে বিজিবি সদস্যরা একটি সন্দেহজনক সিএনজি আটক করে এবং তল্লাশিকালে তাতে থাকা ৩০ (ত্রিশ) কেজি ভারতীয় গাঁজা জব্দ করে। সেই সঙ্গে সিএনজির ভেতর থেকে মোঃ কবির হোসেন (৪০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়, যিনি বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ মিয়ার পুত্র।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আটক মোঃ কবির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় গাঁজা পাচার ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলো। তার বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে একাধিক অভিযোগ থাকলেও এবারে তাকে হাতেনাতে ধরা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মাদকের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলেও জানায় বিজিবি।
অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, “বিজিবি সবসময়ই সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, মাদকপাচার এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক তৎপরতা রোধে সচেষ্ট। আমাদের নিয়মিত টহল, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং জনগণের সহায়তায় আমরা সীমান্তকে নিরাপদ রাখতে কাজ করছি। এই অভিযান আমাদের অঙ্গীকারের একটি বাস্তব প্রমাণ।”
জব্দকৃত ৩০ কেজি গাঁজা ও সংশ্লিষ্ট সিএনজি গাড়ির আনুমানিক বাজার মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৯ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। অভিযানের সময় গাঁজাগুলোর সাথে মাদক পাচারের কাজে ব্যবহৃত সিএনজি গাড়িটি জব্দ করা হয় এবং বর্তমানে তা ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নির্দেশনায় জব্দকৃত গাঁজাসমূহ পরবর্তীতে ধ্বংসের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অনেকে এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সীমান্ত এলাকায় মাদক সমস্যা দীর্ঘদিনের এবং এ ধরনের অভিযান মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। তারা বিজিবির নিয়মিত তৎপরতা এবং সাহসিকতাপূর্ণ অভিযানের প্রশংসা করেন।
সর্বশেষে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ জিয়াউর রহমান এও বলেন, “আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে। সীমান্ত দিয়ে মাদকসহ কোনো ধরনের অবৈধ কার্যক্রমকে ছাড় দেওয়া হবে না। ভবিষ্যতেও যেকোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে আমাদের বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।”
Leave a Reply