আবু নাসের মহিউদ্দিন,কুয়েত প্রতিনিধি:
মধ্য প্রাচের মরুর উত্তপ্ত রোদে স্বপ্নের সমাপ্তি হচ্ছে লক্ষ লক্ষ তরুনের, হবে না কেন ১০ লক্ষ টাকার ভীসার পারিশ্রমিক ৩০ হাজার টাকা। যা প্রতিনিয়ত নিজের ওপরিবারের খরচ মেটাতে গিয়েই হিমশিম খেতে হয় প্রবাসী তরুণদের।
তার উপর বছরে একবার আকামা নবায়ন করতে গিয়ে বাড়তি চাপ যা যেন কাঁধে চাপা এক পাহাড়! অথচ এই কষ্টকর জীবনের সূচনা হয়েছে দেশ থেকে যুবকের ৬-১০- লাখ টাকা ধার করে প্রবাসের পারি দিয়ে, বয়স ১৮ হলেও পাসপোর্টে ২১ বছর লেখা কালিতে মিথ্যার ছাপ এখানে শুরু হল জীবনে। অভিভাবকেরা স্বপ্ন দেখেন ছেলে বিদেশে যাবে, ঘুরে দাঁড়াবে, ঘর ঠিক করবে,আমাদের না পাওয়া সকল চাহিদা পূর্ণতা পাবে! কিন্তু সেই ছেলে হয়তো প্রতিদিন রাত বিষণ্নতায় ডুবে থাকবে, একথা মা-বাবা কখনো ভাবতে পারেনি।
কারণ দেশে রেখে আসা ঋণ তার বুক চেপে ধরে, কুয়েতে কাজ না থাকলে তিন বেলা খাওয়া জোটে না। তরুণ বয়সের স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে রূপ নেয় হতাশার গভীর গহ্বরে। কিছু প্রিয় মুখের আশা বাঁচিয়ে রাখলেও, একটা সময় সে বোঝবে সে নিজেই হারিয়ে যাচ্ছে। আর তখনই কেউ কেউ চিরতরে বিদায় নেয় এই নির্মম পৃথিবী থেকে নীরবে, নিঃশব্দে আশার জাল বুনতে বুনতে।
এই অব্যক্ত যন্ত্রণা বুঝে না অনেকে,তারা দেখে শুধু পাসপোর্ট হাতে এক তরুণের ছবি জন্মভূমি ছেড়ে যে নেমেছিল জীবনের লড়াইয়ে। কেউ বোঝে না, তার চোখে প্রতিদিন জলের ঢেউ নামে, বুকের ভেতর জমে থাকে শত শত না বলা কথা রাতের নির্ঘুম অশ্রুসিক্ত চোখের কোনে ঝড়ছে জল যে।
এখন সময় এসেছে এই বৃত্ত ভাঙার প্রবাসে আসার আগে যথাযথ প্রস্তুতি, সত্যিকারের বয়স ও দক্ষতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং দেশে স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থার দাবি তোলা খুবই জরুরি। যেন কোনো সন্তান আর হারিয়ে না যায় দুনিয়ার একাকী কোন কোণে, ঋণের দায় মাথায় নিয়ে।
আমরা হারিয়ে যেতে দিতে পারিনা নিজের দেশের যুবকদের যাদের প্রতিনিয়ত সংগ্রাম দেখে আমি বলে উঠি ওহ,প্রবাস তুমি আর কত এভাবে আমাদের সর্ব শান্ত করে কফিনে বন্দি করে ঘুম পাড়িয়ে রাখবে।
প্রবাসীদের না বলা কথা নিয়ে আর ফিরার সুযোগটা পায় না সেটা বুঝতে অনেকটা সময় পার হয়েছে ওহ প্রবাসী আমিও যে।
Leave a Reply