আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
ঘর ভাংচুরে বাঁধা দেয়ায় শাহিনুর বেগম নামের এক নারীকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া হোসাইনপুর খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সের পরিচালক মাওলানার নেছার উদ্দিন ও তার সহযোগীরা পিটিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারী এমন অভিযোগ করেছেন। স্বজনরা ওই নারীকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার দুপুরে। বৃহস্পতিবার ঘর ভাংচুরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া নামক স্থানে ছারছীনা দরবারের পীর মাওলানা শাহ মোঃ মোহেবুল্লাহ খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছেন। ওই কমপ্লেক্সের নামে ৩০ একর জমি রয়েছে। ওই জমির মধ্যে ৬৬ শতাংশ জমি মাজেদা বেগম নামের এক নারী দাবী করেন । তিনি ওই জমি দখল পেতে ২০১৫ সালে বরগুনার আমতলী সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক ২০২১ সালে ৮ সেপ্টেম্বর ওই জমি মাজেদার পক্ষে ছোলে ডিক্রী রায় দেন। ওই ডিক্রীর বিরুদ্ধে খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সের পরিচালক নেছার উদ্দিন একই আদালতে এ বছর গত ১৪ জানুয়ারী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক ওই ছোলে ডিক্রীর রায় স্থাগিত করেন দেন। এদিকে রায়ের বলে গত শনিবার রাতের আধারে মাজেদা বেগম কমপ্লেক্সের মুল ফটকের সামনে টিন সেড ঘর নিমার্ণ করেন। ওই ঘরে তিনি ও তার পরিবারের বসবাস করছেন। এ ঘটনায় সোমবার কমপ্লেক্সের পরিচালক মোঃ নেছার উদ্দিন আমতলী থানায় মাজেদাকেসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার মামলার আসামী মাজেদাসহ চারজন আমতলী আদালতে হাজির হতে যায়। ওই ফাঁকে কমপ্লেক্সের মুল ফটকে থাকা ঘর পরিচালক নেছার উদ্দিন, মাওলানা অহিদ, খাদেম আলতাফ হোসেন, আনোয়ার হোসেন মন্টু ও মনির হোসেনসহ ২০-২৫ জন ছাত্র ঘর ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ শাহিনুর বেগমের। ওই ঘর ভাংচুরে বাঁধা দেয়ায় মামলার আসামী মাসুদের স্ত্রী শাহিনুরকে তারা পিটিয়ে জখম করেছে। ওইদিন সন্ধ্যায় মারধরের শিকার ওই নারীকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘর ভাংচুরের একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখাগেছে, মারধরের শিকার শাহিনুর বেগম হাসপাতালের বিছানায় অসহনীয় যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। তিনি ঠিকমত কথা বলতে পারছেন না। এ ঘটনায় জড়িত নেছার উদ্দিন ও মাওলানার অহিদসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছেন।
মাজেদা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমাদের পক্ষে কেউ নেই। অলী আউলিয়ার দরবার শুনে কেউ আমাদের পক্ষে কথা বলে না। কমপ্লেক্সের পরিচালক নেছার উদ্দিন, মাওলানা অহিদ, খাদেম আলতাফ ও হুজুর শিক্ষকসহ ২০-২৫ জন ছাত্ররা আমার ছেলের বউকে মারধর করে ঘর ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ আমার জমি জোরপুর্বক দখল করে রেখেছে। আমি তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছি।
আমড়াগাছিয়া হোসাইনপুর খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সের পরিচালক মাওলানার নেছার উদ্দিন নারীকে মারধর ও ঘর ভাংচুরের কথা অস্বীকার করে বলেন, ওইস্থানে কোন ঘরই ছিল না।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, শাহিনুরকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply