দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি:
জনভোগান্তি বর্ষা মৌসুমে যেমন শুষ্ক মৌসুমেও তেমন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও সদর উপজেলার লাখো মানুষকে। এ দুই উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে খরস্রোতা আত্রাই নদী। এ নদীর দুই দিকের মানুষের বর্ষায় ভরসা নৌকা, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার পশ্চিম সাঁইতাড়া-সদর উপজেলার বুড়িরহাটের মধ্যে আত্রাই নদীতে একটি সেতুর অভাবে হাজার হাজার মানুষকে নিত্যদিনেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষাকালে এ নদী রুদ্র রুপ ধারণ করে। শুষ্ক মৌসুমে জেগে ওঠে বালুচর। আর কিছু স্থানে পানি থাকে। বর্ষাকালে নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই হয় নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম। নদীর দুই দিকের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি সেতু। অনেকে আশ্বাস দিলেও কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানান স্থানীয়রা।
এ নদীর একদিকে চিরিরবন্দর উপজেলার পশ্চিম সাঁইতাড়া, খোচনা, চড়কডাঙ্গা, অকড়াবাড়ি, ঘন্টাঘর, বাংলাবাজার এবং অপরদিকে
দিনাজপুর সদরের হরিরামপুর, ঝানজিরা, পূর্ব বীরগাঁ, পারগাঁ, মাধবপুর, রানীগঞ্জ, চাঁদগঞ্জসহ অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ এ ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। অপরদিকে, ঘাটের পাশে বসে বুড়িরহাট বাজার। নদীর দুই পারের হাজার হাজার মানুষ এখানে বেচাকেনা করেন। এই বুড়িরহাটের পাশে আত্রাই নদীর ঘাট ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও নদীর দুই পারের রানীগঞ্জসহ কয়েকটি হাট-বাজার বসে।
চিরিরবন্দর উপজেলার সাঁইতাড়া ইউনিয়নের চাষি এনামুল হক, মতিয়ার রহমান, হবিবর রহমান, সবুজ রায়সহ অনেকে জানান, আমাদের দুর্ভোগ ছাড়ে না। নদীর উভয়দিকের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এতে ন্যায্য বাজার মূল্য না পেয়ে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হন।
দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের (ইউপি) সদস্য সুমিতা রানী রায় জানান, প্রতিদিন নদী পারাপারে হাজারো মানুষের ভরসা বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বুড়িরহাট নদীর ঘাটের ওপর বাঁশের সাঁকো। শুষ্ক মৌসুমে নদীর দুই পাশের মাটির নিচু রাস্তা পেরিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে নিত্যদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন, মাইক্রোবাস না চললেও শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনে অটোচার্জার বাঁশের সাঁকো দিয়েই পারাপার হতে হয়।
ফাজিলপুর ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্ষার সময় নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। গর্ভবতী মা-বোন, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও অসুস্থ ব্যক্রিদের পারাপার করা যেমন ভীতিকর তেমনি কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব অঞ্চলের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন এবং গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করতে হলে এখানে একটি সেতু নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরও জানান, গত তিন বছর আগে এই বুড়িরহাটের ঘাটে জরিপ এবং মাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। এরপর আর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।দিনাজপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী নীতিণ কুমার জানান, আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply