নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুরাদনগরের দাররা ইউনিয়নের মুগসাইর গ্রামের সন্তান মন্তাজ উদ্দীন বেপারী, এক নির্ভীক মুক্তিযোদ্ধা। পিতা ছলুমুদ্দীন বেপারী ছিলেন একজন ধার্মিক ও সমাজসেবক, আর মাতা করফুলনেছা একজন সংগ্রামী নারী। সাত সদস্যের সংসারে বেড়ে ওঠা মন্তাজ উদ্দীন ছোটবেলা থেকেই দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে ভারত গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
তার অধীনস্থ কমান্ডার ছিলেন মোঃ খোকন মিয়ার ছেলে করিম ডিলার, যার বাড়ি ছিলো মুরাদনগরের পাহাড়পুর পান্তি গ্রামে। ১৯৭১ সালের ভয়াল সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি। তখন বাবা-মার উদ্বেগ সত্ত্বেও দেশকে ভালোবেসে এগিয়ে গিয়েছিলেন যুদ্ধে।
যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বরের সেই বিজয়ের দিন আজো মনে গেঁথে আছে। কিন্তু স্বাধীনতার পরে সমাজের এক শ্রেণির প্রতারক, মিথ্যাবাদী শিক্ষিত লোকদের কারণে এবং পরিবারকে ভয় দেখানোর ফলে তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “আজ যদি আমার মুক্তিযোদ্ধা নাম থাকত, তাহলে আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ আরও ভালো হতো।”
১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় ভিটেমাটি হারিয়ে কুড়াখালে শ্বশুর বাড়ির সহায়তায় নতুনভাবে জীবন শুরু করেন। বর্তমানে তার ছয় কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে। তার একমাত্র ছেলে একজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।
মন্তাজ উদ্দীন বলেন, “আমি আজো গরীব মানুষ, কিন্তু চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন আমার পরিবার অন্তত শান্তিতে থাকতে পারে।” তিনি দেশের কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম ও সমাজের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের প্রতি আহ্বান জানান—একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার খোঁজ যেন কেউ নেয়, যেন জীবনের শেষপ্রান্তে এসে তিনি অবহেলার শিকার না হন।
Leave a Reply