মামুন রাফী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
৫ আগস্টের পর হঠাৎ বিএনপির নেতা বনে গেছে ফাহাদুল ইসলাম পাভেল নামের এক যুবক। নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয় সে। স্থানীয় রহমত বাজার এলাকায় বনবিভাগের সরকারি গাছ কাটা, হাস-মুরগির খোয়াড় দখল, আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে সেল্টার দেওয়া, বাজার দখল থেকে শুরু করে এমন কিছু বাদ নেই, যা সে দখল করেনি। সেই সঙ্গে ক্ষমতার এতোই প্রভাব তার- বনবিভাগের সরকারি কর্মচারীকে বিদ্যুৎতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটানোর হুমকিও দিয়েছে সে। শুধু তাই নয়- জেলেদের নাম ভাঙিয়ে সরকারি চালও আত্মসাৎ করেছে এই নেতা।
স্থানীয়রা বলছেন- আওয়ামী শাসনামলে তারা যতটা ভয়ংকর ছিল তার চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে বিএনপির নামদারি যুবদলের এই নেতা। জুলাই বিপ্লবের পর হঠাৎ নেতা বনে যাওয়া এই পাভেল এলাকায় যেন ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ মনে করছে। তার এমন কর্মকার্ন্ডে চরম বির্ব্রত স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুবদল নেতা পাভেল ৫ আগস্টের পর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ও নিজের দল ভারী করতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর লোকজনকে শেল্টার দিচ্ছে। বুড়িরচর ইউনিয়নের রহমত বাজারের ইজারাকৃত হাঁস-মুরগির খোয়াড় জোরপূর্বক দখল করে অর্থ আত্মসাৎ করছে। সেই সঙ্গে বাজার কমিটিও দখলে নিয়েছে সে। বিএনপির নেতা হওয়ায় ইজারাদার ভয়ে মুখও খুলতে পারছেন না। বুড়িরচর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জেলেদের কার্ড জালিয়াতি করে ১১ বস্তা চাউল আত্মসাৎ করেছে। বাজারের পূর্ব পাশে পর্যটন স্পটে অন্যদের দোকান সরিয়ে নিতে হুমকি দিয়ে সে নিজেই দোকান বানিয়েছে বনবিভাগের সরকারির গাছ কেটে। এই ঘটনায় প্রতিবাদ করায় বনবিভাগের এক সদস্যকে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে।
বনবিভাগের সদস্য মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করছি। পাভেল নামের এই যুবদল নেতা দিনেদুপুরে বনবিভাগের গাছ কেটে দোকান বানাচ্ছিল। বনের গাছ কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এমন অপরাধের পরও তার বিরুদ্ধে আমি কোনো কিছু বলতে পারছিলাম না। পযাপ্ত ফোর্স না থাকায়। তাই বিষয়টি আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছিলাম। এই অপরাধে যুবদল নেতা পাভেল আমাকে তার ফার্মেসীতে ডেকে নিয়ে হুমকি দিয়ে জানায়- আমি যদি সরকারি চাকরি করতে চাই তাহলে যেন তার বিষয়ে চুপ থাকি। অন্যথায় লোকজন দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে পেটাবে। এই পরিস্থিতিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে- উপকূলীয় বনবিভাগের সাগরিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রনব কুমার বলেন, অভিযোগের বিষয়ে অবগত হওয়ার পরই কাটা গাছগুলো জব্দ করেছি। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তবে স্থানীয় বিএনপির প্রভাব বিস্তার নিয়ে শঙ্কিত বলেও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
তথ্য বলছে, কোনো ধরণের ডাক্তারি কোর্স তো দূরের কথা- ফার্মাসিস্ট কোর্সের প্রশিক্ষণ না নিয়েও নিজেকে ডাক্তার দাবি করে এলাকায় নিজের নাম রেখেছেন ডাক্তার পাভেল। স্থানীয় রহমত বাজারে ফার্মাসি চালাচ্ছেন কিন্তু ফার্মাসিস্টের কোনো অনুমোদনও নেই। উল্টো রোগীও দেখেন কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই। সঙ্গে জুলাই বিপ্লবের পর নিজেকে বিরাট নেতা দাবি করে বেড়াচ্ছেন এলাকায়।
অভিযোগ রয়েছে- পাভেলের এসব অপকর্মের আর্থিক সুবিধা পায়- ইউনিয়ন যুবদল থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নেতা রুবেল উদ্দিন রনি। সেই সঙ্গে তার এসব অপকর্ম থেকে ভাগ নেয় হাতিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ওসমান গনি নামের অপর আরেক নেতা। যে কারণে এসব অভিযোগ জানার পরেও পাভেলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না তারা। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে রহমত বাজারের ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারি পদও ভাগিয়ে নেয় পাভেল। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এই বিষয়ে স্থানীয় যুবদল নেতা ও ফার্মেসী ব্যবসায়ী সোহরাব জানান, তার দলীয় প্রভাব বিস্তারে অতিষ্ঠ জেলেরা, সাধারণ জনগণের এবং এলাকাবাসী। কয়েকদিন আগে জেলেদের প্রায় ১১ বস্তা চাউল না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে, নৌকার মাঝিদের থেকে নৌ- পুলিশ এর কথা বলে ৫ হাজার ১০ হাজার করে নিয়েছে। ট্রাকে করে বনের গাছ কেটে এনে রেস্টুরেন্ট দিয়েছে, আর কাউকে দোকান করতে দিবে না রহমত বাজার পর্যটন স্পষ্টে। তাকে সেল্টার দিচ্ছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ ওসমান ও রুবেল উদ্দিন রনি। তার প্রভাব বিস্তারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। এসব বিষয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে, জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে একাধিকবার নেতাদেরকে বললে তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে আমরাও বদনামের শিকার হচ্ছি।
তবে পাভেলের দাবি- সব অভিযোগ মিথ্যা।
এবিষয়ে হাতিয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, তার অভিযোগের বিষয়ে অবগত ছিলাম। তবে অভিযোগ সত্য হলে আমি অন্যায়ের পক্ষ অবস্থান নিবো না। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্তপূর্বক সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টাঃ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান,অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট।। সম্মানিত উপদেষ্টাঃ সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ আমজাদ হোসেন রতন ।। সিনিয়র সাংবাদিকঃ ডা.এম এ মান্নান ।। সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ রেজাউল করিম ।। নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ সোলায়মান হোসাইন ।। বার্তা সম্পাদকঃ জাকারিয়া আল ফয়সাল।
যোগাযোগঃঠিকানা: হাসেম মার্কেট, কুরগাও, নবীনগর, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা 1216। রোড নাম্বার 733 হো নাম্বার 805 ফোন: +65 8541 3954, 01894589037,মেইল:dailynewsbangla24info@gmail.com
Copyright ©️ 2024 in Daily News Bangla 24