কে.এম. ইসলাম, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
আজ শনিবার সকালে (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঝালকাঠির কেন্দ্রিয় ঈদগাহ ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার উদ্যোগে দীর্ঘ ২২ বছর পর কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আয়োজিত এই সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বিগত সময়ের রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন।
সমাবেশের প্রধান অতিথি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, গত ৫৪ বছর ধরে কোনো সরকারই দেশের শান্তি ও প্রকৃত উন্নয়ন করতে পারে নি। তাছাড়া ১৬ বছর ধরে দেশে হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরাচারী শাসন চলছিল। গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে, নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছিলো। একমাত্র ইসলামি শাসনব্যবস্থা দিতে পারে শান্তি শৃঙ্খলা, মানবিক মূল্যেবোধ ও প্রকৃত উন্নয়ন। এখন শান্তি সুশাসন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামি দলগুলোর পক্ষে ভোট দিন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বরিশাল অঞ্চল পরিচালক অ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল বলেন, দেশে আইনের শাসন ছিল না, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিল দিনের পর দিন। আমাদের নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে। আগামীতে জনগণ ভোটের মাধ্যেমে এসবের জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।।
কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর আমীর অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের আমরা স্মরণ করছি। তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সাম্য ও ন্যায়ের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন। ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে এসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও বরিশাল অঞ্চল টিম সদস্য এ.কে.এম. ফখরুদ্দীন খান রাযী বলেন, দেশের জনগণ এখন পরিবর্তন চায়। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম বলেন, শ্রমজীবী মানুষ আজ দিশেহারা ছিল বিগত। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দুঃসহ জীবনযাপন করছে। আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন চাই।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও বরিশাল জেলা আমীর অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে লড়াই করে গেছে বছরের পর বছর। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবসময় জনগণের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।
সাবেক এজিএস, বাকসু ও ব্যবসায়ী বিভাগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ নেয়ামুল করিম বলেন, ছাত্রসমাজ আজ অধিকার বঞ্চিত। হাসিনা সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে গেছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই, গুণগত শিক্ষা ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ চাই।
সমাবেশের সভাপতি ও ঝালকাঠি জেলা আমীর অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান বলেন, আজকের এই জনসমাবেশ প্রমাণ করে, জামায়াতে ইসলামী এখনো জনগণের ভালোবাসা ধরে রেখেছে। আমরা এমন শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ চাই, যেখানে সবাই তাদের মত প্রকাশ করতে পারবে।
সমাবেশে ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
Leave a Reply