আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বিয়ের দাবীতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়ীতে অনশনে বসেন তিন সন্তানের জননী প্রেমিকা নাজমা বেগম। এ সময় কালাম মীরের ছোট ভাই, স্ত্রী, জা ও মা তাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানষিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাজমা বেগম এমন অভিযোগ করেছেন। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামে রবিবার ১১ টার দিকে।
জানাগেছে, ২০০৮ সালে উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামের রিপন মোল্লার সঙ্গে নাজমা বেগমের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। ২০২২ সালে নাজমা বেগম খালাতো দেবর আবুল কালাম মীরের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনার জের ধরে গত ২৯ মার্চ স্বামী তাকে তালাক দেয়। গত রবিবার সন্ধ্যায় নাজমা প্রেমিক কালামের বাড়ীতে বিয়ের দাবীতে অনশনে বসেন। ওই সময় কালাম বাড়ীতে ছিল না। ওইদিন রাতে নাজমাকে কালামের ছোট ভাই বক্কর মীর, স্ত্রী লামিয়া, জা লাকি বেগম, মা পরি বিবি লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানষিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন তার দুই হাত, দুই পা, বাহু ও কোমড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে তারা তার চোখ ও গোপনাঙ্গে মরিচের গুড়া দেয় এমন দাবী নাজমার। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার ও নারী ইউপি সদস্য হাসনেহেনা বেগম তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সোমবার রাতে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছেন।
প্রেমিকা নাজমা বেগম বলেন, বিয়ের দাবীতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়ীতে অনশনে বসি। পরে তার ছোট ভাই বক্কর মীর, স্ত্রী লামিয়া, জা লাকি ও মা পরি বিবি আমাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এভাবে তারা আমাকে তিন ঘন্টা নির্যাতন করেছে। তিনি আরো বলেন, তারা আমার চোখ ও গোপনাঙ্গে মরিচের গুড়া দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবী করছি।
প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বড় ভাই আবুল হোসেন মীর তার ভাইয়ের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়ী ছিলাম না। বাড়ী এসে শুনেছি তাকে মারধর করেছে। তিনি আরো বলেন, রাত ১১ টার দিকে দুই ইউপি সদস্য তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছে।
নারী ইউপি সদস্য হাসনাহেনা বেগম ও ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার বলেন, নির্যাতনের খবর পেয়ে রাত ১১ টার দিকে কালামের বাড়ী থেকে নাজমাকে উদ্ধার করেছি। পরে তাকে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply