আবু নাসের মহিউদ্দিন, কুয়েত প্রতিনিধি
কুয়েত সিটি থেকে প্রায় ১০০ কিঃমিঃ দূরে হবে ওয়াফড়া 125 কিঃমিঃআব্দালী, ফার্ম, গ্রীনহাউজ, সবজীর খেত গুলো যে নামে আমরা বলি না কেন, যেখানে অবৈধ প্রবাসীদের একটা বড় অংশ বসবাস করছে। তাদের উপার্জন করতে -অথবা মরুর মধ্যে এই স্থানগুলো নিরাপদ মনে করে তাই অবৈধরা এসমস্ত এলাকায় বসবাস তেমনিভাবেই চাঁদপুর,হাজীগঞ্জ, বরুড়া, এই তিন এলাকার ২০ জন কে ঢাকার এক দালাল মক্তবের ভীসায় নিয়ে আসে কুয়েত। এসেই তাদের জীবনে নেমে আসলো ঘন-আধাঁর কাল রাতে মত জীবনে প্রতিটি মূহুর্তে কাটছে তাদের – কারো আকামা লাগায়-নি মেডিকেল করায়নি দা-লা-ল.
তাদের মধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরলেন হাজীগঞ্জ এর আব্দুল্লাহ ভাই, পেটে অসহ্যনীয় ব্যাথ্যা অনুভব করছেন, ডাঃ এর কাছে যাবে কিন্তু তিনি অবৈধ কিভাবে যাবেন? একটি প্রাইভেট হাসপাতালে গেলেন ডাঃ দেখাতে সেখানে সমস্যায় পরলেন তাকে তারা চিকিৎসা দিতে চাইল না! এখন তিনি সরকারি হাসপাতালে গেলেন একজন দেশের লোক কে বললেন বিস্তারিত তিনি তাকে সাহায্য করতে সম্মতি জানালেন। ডাঃ দেখালেন কিছু টেষ্ট করিয়ে আনতে বললেন এগুলো শেষ করে ডাঃ কাছে গেলেন তিনি বললেন আব্দুল্লাহ তোমার দুটি কিডনিতে পাথর হয়েছে জরুরী অপারেশন করতে হবে।
আব্দুল্লাহ ভাই এর সামনের কষ্টের দিন গুলো আরও একটু বেদনাময় চলুন… আব্দুল অপারেশন বাবদ খরচ করতে হবে অনেক টাকা যা আমরা উল্লেখ করলাম না যে কোন সমস্যা হওয়ার থেকে বাঁচতে, অনেক টাকা খরচ করে অপারেশন করলেন যা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম শুধু বললাম কি? বলেন ভাই এত টাকা অসম্ভব?.. কেন?..কেন নিল?.
এমন বিপদগ্রস্ত হলে অপরাধী একশ্রেণীর নিজ দেশের লোকেরা তার অপর ভাইকে জবাই করার ন্যায় টাকা আদায় করে এটা কখনো কি তারা ভাবে না যে লোকটি কতটা বিপদগ্রস্ত হয়ে আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য আসছে।
গত তিন মাস ধরে ঘুরছেন প্রতিটি সপ্তাহে তিনি দু-বার আসতে হয় তাকে আদান হাসপাতালে অপারেশন এর সময় কিডনির দু-পাশে দুটি পাইপ স্থাপন করা হয় এগুলো খুলতে হবে। প্রতিদিন আসতে খরচ হয় ১৫ দিনার গাড়ি ভাড়া এবং ডাঃ এর ফী ১০ দিনার মাসে এক বার তারপর নিয়ে নেয় সহযোগী হয়ে কিছু।
আব্দুল্লাহ দেশে চলে যান না কেন?
একটি ভাই ছিল তিনি মারা গেছেন তার তিনটা মেয়ে আছে তাদের বিয়ে দিয়েছে ৭ বছর অবৈধভাবে থেকে যা কামাই করছেন তা দিয়ে। নিজের পরিবারে দুটি ছেলে মেয়ে আছে এখন মেয়েটা কে বিয়ে দিতে হবে তাই চলে যাচ্ছি না দু-তিন বছর তাকে বিয়ে দিয়ে চলে যাব ভাই। কথা গুলো বলতে বলতে পৌচ্ছে গেলাম তার গন্তব্য তিনি দুপুরে খেতে যাওয়ার আহবান করেন, তারপর সবজি নিয়ে-যান সমাদর করলেন আমি বললাম ভাই আল্লাহ সুস্থ রাখুন আপনাকে।
চলতে থাকবে কত দিন তাদের আসা যাওয়া এমন করে হাসপাতালে বারান্দায়? কখন আব্দুল্লাহ এর মত লোকেরা রেহায় পাবে এমন জীবন থেকে?
এক দিকে দালাল এর কারণে আজ আব্দুল্লাহ এর মত হাজার বাংলাদেশের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দেশে গিয়ে আজ অসহায় হারাচ্ছে নিজের সব কিছু দেশে ঋণ,সুদ,কিস্তি,জমি বন্ধকী সহ অসংখ্য বেদনার জাল বুনে তারপর এমন বিপদ জীবনে থাকলে কিভাবে বাঁচবে আব্দুল্লাহ এর মত লোকরা? যে দেশের দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে দেশের মানুষ। যেখানে পাশের দেশগুলো থেকে আসতে খরচ হয় ১ লাখ আর আমাদেরকে দিতে হয় ১০ লাখ কেন কখন আমরা নিজের দেশের মানুষের ক্ষতি করা থেকে বিরত হব?
কখন আব্দুল্লাহ এর মত লোকেরা শান্তিতে ঘুমাতে পারব?……..
আল্লাহ পাক সকল প্রবাসিদের ভালো রাখুন, তাদের সকল কে সহি বুঝ দান করুন।
Leave a Reply