মো: আরিফুর রহমান অরি, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চল বাচামারা, বাঘুটিয়া ও চরকাটারি ইউনিয়নে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকারের উৎসবে মেতেছে অসাধু অসংখ্য জেলেরা।
রবিবার সরেজমিনে যমুনায় পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেপরোয়া হয়ে দিন-রাত যমুনা নদীতে শিকার করছে মনকে মন ইশিশ মাছ। মৎস্য বিভাগের ঢিলে-ঢালা অভিযানের কারণে জেলেরা মেতে উঠেছে ইলিশ শিকারে। নিধন ইলিশ গুলো প্রকাশ্যই পাল্লা দিয়ে অবাধে বিক্রি করছে যমুনার বিভিন্ন নদীর পাড় সহ স্থানীয় হাট-বাজার ও গ্রামগঞ্জে। এছাড়া প্রতিদিন ভোরে যমুনার পাড়ে বসছে ইলিশ বিক্রির রমরমা হাট। ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, অধা কেজির ৭০০ টাকা ও ছোট গুলো পাচঁশত টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শতশত ক্রেতা-ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত মাছ বিক্রির নদী পাড়ের হাট। এখানে বাতাসে বইছে ইলিশের গন্ধ। ইলিশ মৌসুমে কিছু মাছ ব্যবসায়ীরা বাঘুটিয়ার পাচুরিয়া বাজার-নদীর পাড়, নতুন শ্যামগজ বাজার, দে পাড়া, বাচামারা ইউনিয়নের নদীর পাড়-বাজার, চরকাটারির নদীর পাড় সহ জিয়নপুরের আমতলী ও পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার দপ্তিয়রের বাজার-গ্রামগঞ্জে বিক্রি করছে।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের দায়সারা ঢিলেঢালা অভিযানের কারণে জেলেরা যমুনায় ইলিশ ধরায় সাহস পাচ্ছে। চরাঞ্চলের নদীর পাড়-বাজার ও গ্রামগঞ্জে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। প্রতিদিন দিন-রাতে যমুনায় অভিযান চলমান থাকলে ইলিশ নিধন কম হবে।
জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময় এসব এলাকায় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুতকরণ নিষিদ্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, কম জনবল ও সীমিত টাকা বরাদ্দ থাকায় প্রতিদিন যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব নয়। গত বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকালে যমুনায় অভিযান চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫ জনকে ১৫ হাজার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং অভিযানে জব্দকৃত ৪০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় ও ১৫ কেজি ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানা-মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে, গত শনিবার সকালে যমুনায অভিযান চালিয়ে ইলিশ ধরায় ৪ জেলেকে ১৫ দিনের জেল দিযেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জব্দ ৫ হাজার মিটার জাল ধ্বংস করা সহ ৫ কেজি ইলিশ স্থানীয় মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রজত বিশ্বাস উক্ত কারাদণ্ড দেন। অভিযান অংশনেন উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মীরাসহ পুলিশ টিম। যমুনায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখার বিষয়টি প্রক্রিয়া চলছে।
Leave a Reply