মো: রনি,ধনবাড়ী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
ধনবাড়ী কাঁচা বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সব ধরনের শাক-সবজি। দোকান গুলোতে শীতের সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে কমতে শুরু করেছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতা।
সপ্তাহের ব্যবধানে হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ১০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। এর ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে জনসাধারণের মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, মাসখানেকের মধ্যে বাজারের উত্তাপ আরও কমে আসবে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইল জেলা ধনবাড়ী উপজেলায় একাধিক বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহের বাজারেও বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। আজ বাজারে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। বাজারে করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত ছিল।
এ ছাড়া, বর্তমান বাজারে ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা যা আগে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা যা আগে ছিল ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা যা পূর্বে ছিল ৮০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা যা ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, কপি ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা। আর প্রতি প্রতি কেজি কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১১০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, শিম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
বাজার সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, সপ্তাহজুড়ে তেজ ছড়ানো কাঁচামরিচের দামও কিছুটা কমতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহেও ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে নিম্নমুখী শাকের বাজারও। লালশাকের আঁটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ৪০ টাকা, ডাঁটাশাক ২৫ টাকা, কলমিশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
গত সপ্তাহে বাড়তির দিকে থাকা কাঁচা মরিচের দাম কমে চলতি সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়, আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০-১৯০ টাকা দরে।
এদিকে, বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমে আসায় স্বস্তির নিশ্বাস দেখা গেছে ক্রেতাদের মধ্যে। রুবেল আহমেদ বলেন, বাজারে শাক-সবজির দাম অনেকটাই কমে এসেছে। তবে আরেকটু কমলে আমাদের জন্য ভালো হয়৷ সরকার মনিটরিং বজায় রাখলে বাজার নাগালে রাখা সম্ভব।তিনি বলেন, আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ, প্রতিদিন মাছ-মাংস খাই না। শাকসবজি খেয়েই বাঁচি, এগুলোর দাম বেশি থাকলে আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।
আব্দুল আলিম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, প্রায় মাসখানেক ধরে দেখছি বাজার চড়া, অথচ নতুন সরকারের কাছে মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী আমরা এখনও তেমন কিছুই দেখছি না। এই মুহূর্তে সরকারের উচিত বাজারে তদারকি বাড়ানো এবং যেকোনো মূল্যে এই নিয়ন্ত্রণ করা। নয়ত সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকার ব্যর্থ হবে।
সবজির বাজারের দাম প্রসঙ্গে বিক্রেতা মো: মিন্টু বলেন, বাজারে সবজির দাম কমেছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বেশিরভাগ সবজি পাওয়া যাচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সবজির দাম আরও কমে যাবে।
বেগুনের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেগুনের মৌসুম প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। তাই বেগুনের দাম বেশি রয়েছে।
আরেক বিক্রেতা সুজন বলেন, সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কমতে শুরু করেছে শীতের সবজির দাম। ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব না পড়লে, সামনে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই; বরং আরও কমবে।
Leave a Reply