ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁওয়ের গুরুত্বপূর্র্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে আগুন নেভাতে পানির সোর্স না থাকায় মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো শহর। শহরের চৌরাস্তা, আর্ট গ্যালারী, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, কালিবাড়ি বাজার, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠ, ঠাকুরগাঁও রোড বাজার এলাকায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসায়িক স্থাপনা রয়েছে।
এসব এলাকায় আগুন লাগলে তা নেভাতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে হিমশিম খেতে হয়। কারণ এসব এলাকায় আগুন দ্রুত পাশের প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি-ঘরে ছড়িয়ে পরে। এসময় ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী একটি গাড়ি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।
ওই গাড়ির ৪ হাজার ৩শ’ লিটার পানি শেষ হলেই আবার অফিসে গিয়ে গাড়ি ভর্তি করে পানি নিতেই আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে যায়। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি হয়। এ কারণে খুব দ্রুত সময়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পানির সোর্স তৈরি করা বা ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বসানো জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রবীণ সাংবাদিক ও সাপ্তাহিক সংগ্রামী বাংলার সম্পাদক মো. আব্দুল লতিফ বলেন, একটি পরিকল্পিত শহরে আগুন নেভানোর জন্য বিভিন্ন রাস্তার ধারে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বসানো থাকে। যা সরাসরি পানির পাম্পের সাথে সংযোগ দেওয়া থাকে এবং এতে পানির অতিরিক্ত প্রেসার দেওয়া থাকে।
কোথায় আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছামাত্রই হাইড্রেন্টের বাল্ব খুলে পানি ছিটানোর জন্য পাইপ লাগাবে আর সাথে সাথে স্বাভাবিকের থেকে বেশি গতিতে পানি বেরিয়ে আসবে। যা দিয়ে সহজে ও দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। দায়িত্বশীলরা চাইলে পুরো ঠাকুরগাঁও শহরজুড়ে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বসানো সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন দায়িত্বশীলদের সদিচ্ছা।
পৌর শহরের হাজীপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব শিক্ষক মো. মাসুদ রানা বলেন, ইতোমধ্যে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠ শহরের প্রধান তথা প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এখানে ধুলাবালি প্রচুর। বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও অন্যান্য প্রোগ্রামের সময় ধুলাবালি থেকে পরিবেশ রক্ষায় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি দিয়ে পানি দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না। তাই মাঠের চারপাশে পানির সোর্স বা ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বা পানির সোর্স স্থাপনের জন্য নানা সভা-সেমিনারে জেলা প্রশাসন, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শহরের চৌরাস্তায় আগুনের ঘটনার ক্ষেত্রে বড় গাড়ির পানি শেষ হলে সেটি পূরণ করে পুনরায় আনার সময়ে বড় ক্ষয়-ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে তাদের পানির লাইনের মাঝে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা প্রদান করলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করবে বলে জানান।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, সমস্যাটি নিয়ে ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সাথে মিটিং হয়েছে। তারা এ বিষয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পানির সোর্স বা ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপনের একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা আকারে দিয়েছে। পৌরসভা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে কাজ করছে।
Leave a Reply