মো: জোবায়ের ইসলাম, পবা (রাজশাহী) উপজেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে রাতে ছাত্রীকে নিয়ে কোকের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর অভিযোগ আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদিকুল ইসলাম সাগরের বিরুদ্ধে। ঘুম ভেঙে ওই ছাত্রী দেখেন, ‘সাদা বিছানা র-ক্তা-ক্ত’।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন সিন্ডিকেট সদস্যের পদত্যাগের দাবিও করেন তারা। এর আগে সকালে বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাগরের স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানান তারা।
অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা, ‘চাটুকারের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও,’ ‘আইন বিভাগের বারান্দায় চাটুকারের ঠাঁই নেই’, ‘জালো রে জালো আগুন জালো’, ‘একশান টু একশান ডাইরেক্ট একশান’, ‘নিপীড়ক বাইরে কেন? প্রশাসনের জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তদন্তের সময় অর্ধমাস আগে শেষ হয়ে গেলেও প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। সবার সামনে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। এই তদন্তের কাজে সহযোগিতা করা শিক্ষার্থীদেরও ফলো করা হয়। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও সঙ্কায় আছি।
জানা যায়, গত ২৬ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্লাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের একটি ফেইসবুক গ্রুপে নাফিসা নাহিন নামক একটি ফেইসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরকে ধর্ষক সম্বোধন করে একটি পোস্ট করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে পরদিন ২৭ আগস্ট আইন বিভাগের সভাপতি ড. সাঈদা আঞ্জুর নেতৃত্বে জরুরি একাডেমিক কমিটির সভা শেষে ৫ সদস্য বিশিষ্টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে ১০ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলেও গত ২৪ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। প্রতিবেদনটি যৌন নিপীড়ন সেলে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই সেল অকার্যকর হয়ে আছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
আইন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী আকিল বিন তালিব বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ধর্ষক তাদের দৃষ্টান্তমূলক মূলক শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে যৌন হয়রানি সেল গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই সেলের কোনো কার্যক্রম আমরা দেখতে পাই না। আজকে আমরা আমাদের বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান রাখবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আপনাদের দাবিগুলো সিন্ডিকেটে গৃহীত হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সেটার সত্যতা মিলেছে। তাই আমরা যৌন নিপীড়ন সেলের কাছে বিষয়টি হস্তান্তর করেছি। কিন্তু এতো দিনে যেহেতু যৌন নিপীড়ন সেল এখনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি, তাই আমি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন দ্রুতই যৌন নিপীড়ন সেলকে নতুন করে সাজাবেন।’
Leave a Reply