মামুন রাফী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের ভুয়া উদ্যোক্তা হাতিয়া পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্দা রাসেল উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সচিব ইয়াছিন আরাফাত যোগদানের কিছুদিন পর তিনি তার ভাই রাসেল উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ইউপি বিভিন্ন কাজ করতেন, যা পরবর্তীতে দুই ভাই মিলে দুর্নীতিতে রূপ নেয়। যদিও ইয়াছিন আরাফাত নিজেও চরঈশর ইউনিয়নের একজন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ছিলেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন খাতে যেমন, সেবা প্রদানে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, চাল চুরি এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার মতো কর্মকাণ্ডে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইয়াছিন আরাফাত তার ভাই রাসেল উদ্দিনকে উদ্যোক্তা পদে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। এ লক্ষ্যে তিনি বর্তমান উদ্যোক্তা আমজাদ হোসেনের নিয়োগ বাতিলের চেষ্টা করেন। তবে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম অভিযোগ আমলে না নিয়ে আমজাদ হোসেনের নিয়োগ বহাল রাখেন।পরবর্তী ইউএনও ইমরান হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পরেও একই ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে। তবে, আমজাদ হোসেনের নিয়োগ যাচাই-বাছাই শেষে ইউএনও রাসেল উদ্দিনকে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন এবং আমজাদ হোসেনকে ডিজিটাল সেন্টারের অফিস কক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। রাসেল উদ্দিনকে সতর্ক করে জানানো হয় যে, অবৈধভাবে পরিষদে প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউপি সচিব ইয়াছিন আরাফাত তবুও তার ভাইকে রাখার জন্য নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটান। এর কিছুদিন পর ইউএনও পরিবর্তিত হন এবং নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেন।এদিকে, ডিজিটাল সেন্টারের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি কম্পিউটার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম রাসেল উদ্দিন আত্মসাৎ করেন। পরিষেবা প্রদানের সময় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে, যা একাধিকবার হাতেনাতে ধরা পড়ে।
বুড়িরচর ইউনিয়নের অধিকাংশ অধিবাসী অভিযোগ করেছেন যে, রাসেল উদ্দিন দুর্নীতি, অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ইয়াছিন আরাফাত তার ভাইকে ভূয়া উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এখনও বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আর্থিক সুবিধা ভোগ করছেন।ইউপি নির্বাচন শেষে স্থানীয় চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলে ইয়াছিন আরাফাত নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। অভিযোগ ওঠে, তিনি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলামের কাছে বড় অঙ্কের অর্থ দিয়ে তার ভাইকে উদ্যোক্তা করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানার পর উদ্যোক্তা আমজাদ হোসেন জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং এলজিএসপি ডিস্ট্রিক্ট ফেসিলিটেটর মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ চৌধুরী তদন্ত করেন। তদন্তে ইয়াছিন আরাফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তিস্বরূপ বুড়িরচর ইউনিয়ন থেকে বদলি করে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে পাঠানো হয়। ইয়াছিন আরাফাতের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপে বুড়িরচরের বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেন।জেলা প্রশাসক হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে উদ্যোক্তা আমজাদ হোসেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার নির্দেশ দেন। তবে প্রশাসন বারবার বলার পরেও হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী এবং চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলামের মদদে ভূয়া উদ্যোক্তা রাসেল উদ্দিনকে সরাতে ব্যর্থ হয়।সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও পরিচালক আমজাদ হোসেনের পরিবার বিএনপি করায় তিনি দীর্ঘ ৫ বছর ইউনিয়ন পরিষদের বাইরে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ ডিজিটাল সেন্টার ও বিভিন্ন ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন।অত্র ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ আশঙ্কা করেন, সাবেক ইউপি সচিব পুনরায় ষড়যন্ত্র করে বুড়িরচর ইউনিয়নে বদলি হয়ে এসে পূর্বের মতো তার ভাইকে নিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার চেষ্টা করতে পারেন। বুড়িরচর ইউনিয়নের অধিবাসীরা সঠিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দুর্নীতির অবসান ঘটানোর জন্য জোর দাবি করেন।এই সব বিষয়ে জানতে এবং তার লিগ্যাল ডকুমেন্টস দেখতে চাইলে ইউডিসি রাসেল বলেন আমার সকল ডকুমেন্টস ইউনিয়ন সচিব ছিদ্দিক আহমেদ জুয়েলের কাছে রয়েছে এবং অভিযোগ গুলো অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে ইউনিয়ন সচিব ছিদ্দিক আহমেদ জুয়েল থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান ইউডিসি রাসেলের কোন ডকুমেন্টস আমার কাছে নেই, তিনি আরো বলেন ইউডিসি রাসেলের ডকুমেন্টস সমূহ তো তার কাছে থাকবে আমার কেন থাকবে, সেটা সে মিথ্যা বলেছেন।এই বিষয়ে বুড়িরচর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আকবর হোসেন বলেন, রাসেল ২০১৯ সাল থেকে বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করে আমি দায়িত্ব পাওয়ার ও আগে থেকে আসলে বিষয়টা ভালোভাবে দেখা হয়নি, যদি সে অবৈধ হয় তাহলে এতো বছর কিভাবে কাজ করেছে সেটাও জানতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো আরো খতিয়ে দেখে ইউএনও এর সাথে কথা বলবো।এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, বুড়িরচর ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান আকবর হোসেনের সাথে কথা বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।
প্রধান উপদেষ্টাঃ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান,অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট।। সম্মানিত উপদেষ্টাঃ সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ আমজাদ হোসেন রতন ।। সিনিয়র সাংবাদিকঃ ডা.এম এ মান্নান ।। সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ রেজাউল করিম ।। নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ সোলায়মান হোসাইন ।। বার্তা সম্পাদকঃ জাকারিয়া আল ফয়সাল।
যোগাযোগঃঠিকানা: হাসেম মার্কেট, কুরগাও, নবীনগর, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা 1216। রোড নাম্বার 733 হো নাম্বার 805 ফোন: +65 8541 3954, 01894589037,মেইল:dailynewsbangla24info@gmail.com
Copyright ©️ 2024 in Daily News Bangla 24