1. mahamudreja02@gmail.com : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. presssoliman06@gmail.com : naim :
  3. dailynewsbangla756@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ডেইলি নিউজ বাংলা ২৪ এ সারাদেশে জেলা ও উপজেলা, ক্যাম্পাস, ব্যুরো প্রধান  প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যোগাযোগঃ-01606638418,+6585413954।
শিরোনাম
বিএনপির সেক্রেটারির ভাতিজা পরিচয় দিয়েও শেষ রক্ষা হলোনা,নিষিদ্ধ  ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার যশোর জেলায় ট্রেনিং রিক্রুট কনস্টেবল(টিআরসি)পদে সম্পূর্ণ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিশেষ ব্রিফিং সভা অনুষ্ঠিত নওগাঁয় মানবিক বাংলাদেশ শীর্ষক বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত দিনাজপুরে কারিগরি শিক্ষার্থীদের কাফনের কাপড় পরে মিছিল শহীদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের জন্য নির্মিত ঘর উদ্বোধন যাত্রী ভোগান্তি কমাতে কপোতাক্ষ ফেরি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় ইহুদি কর্তৃক গাজায় গনহত্যার প্রতিবাদে বেকড়া  বিক্ষোভ মিছিল বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতার বর্ষপূর্তি ও জাতীয় দিবস উদযাপনের জন্য কুয়েতে জমকালো আয়োজন যাত্রী ভোগান্তি কমাতে কপোতাক্ষ ফেরি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় নাগরপুরে বিপুল পরিমাণের মাদক সহ কারবারি গ্রেফতার

সংগ্রামী নেত্রী কুমুদিনী হাজং এর প্রয়াণ দিবস আজ:

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫
  • ২২ বার

 

উজ্জ্বল কুমার সরকারঃ

আজ ২৩ মার্চ টংক আন্দোলনের সংগ্রামী নেত্রী কুমুদিনী হাজং প্রয়াণ দিবস। তিনি ২০২৪ সালের আজকের দিনে ৯২ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামের বাড়িতে মারা যান।

কুমুদিনী হাজং: নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে সোমেশ্বরী নদীর পশ্চিম তীরে বহেরাতলী গ্রামে এক কৃষিজীবী হাজং পরিবারে কুমুদিনী হাজং-এর জন্ম। কুমুদিনীর বাবা অতিথ চন্দ্র একজন হাতিখেদা বিদ্রোহী ছিলেন। কুমুদিনী হাজং এর জন্ম সন তিনি নিজেও বলতে পারেন না। কুমুদিনী হাজং এর জন্মের দু’বছর পরেই বাবা অতিথ চন্দ্র রায় হাজং ও মা জনুমনি হাজং মারা যান। মামার কোলে পিঠেই বড় হন কুমুদিনী হাজং। কুমুদিনী হাজং কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ করতে পারেননি। হাজং সম্প্রদায় বরাবরই সুসং জমিদারদের ভগবান তুল্য গণ্য করতো।

এরপরও গারো পাহাড়ি অঞ্চলে জমিদার, মহাজনদের সৃষ্ট টংক প্রথার শর্তানুসারে জমিতে ফসল হোক বা না হোক চুক্তি অনুসারে টংকের ধান জমিদার-মহাজনদের দিতেই হতো। সহজ কথায় হাজং সম্প্রদায়ের শ্রম কেড়ে নেওয়ার জন্য জমিদাররা টংক প্রথা নামে ফাঁদ পেতেছিল। এতে হাজংরা ক্রমেই জমি বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হতে থাকে। এ সময় সুসং দুর্গাপুরের জমিদারদের ভাগ্নে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহ-এর নেতৃত্বে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে টংক প্রথা উচ্ছেদ, টংক জমির খাজনা স্বত্ব, জোত স্বত্ব, নিরিখ মতো টংক জমির খাজনা ধার্য, বকেয়া টংক মওকুফ, জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ ইত্যাদি দাবি নিয়ে টংক আন্দোলন শুরু হয়।

হাজং সম্প্রদায় নিজেদের স্বার্থেই টংক আন্দোলনের সংগে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। সে সূত্রেই কুমুদিনী হাজং এর স্বামী লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর তিন ভাই টংক আন্দোলনের সংগে জড়িয়ে পড়েন। বহেরাতলীসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামে লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর বড় ভাই রাজেন্দ্র হাজং, ইসলেশ্বর হাজং ও গজেন্দ্র হাজং টংক প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য হাজংদের মাঝে সাংগঠনিক কাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতো।

এছাড়া গোটা পরিবারটি কমরেড মনি সিংহর সাথেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে চলতো। সে কারণেই জমিদার ও ব্রিটিশ বাহিনীর কু-দৃষ্টি পড়েছিল লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর ভাইদের উপর।সুসং দুর্গাপুর হাই স্কুল মাঠে দ্বিতীয় পর্যায়ে টংক প্রথা উচ্ছেদের জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি সভার পরেই ব্রিটিশ শাসকদের কু-দৃষ্টি আরো তীব্র আকার ধারণ করে। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা জানুয়ারি দুর্গাপুর থানার বিরিশিরিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেল বাহিনী সশস্ত্র ক্যাম্প স্থাপন করে। বিরিশিরির সেই ক্যাম্প থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে হানা দিয়ে টংক প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী হাজংদের দমন করতে চেষ্টা চালানো হতো। বিভিন্ন গ্রামের হাজং পরিবারগুলো প্রতিদিনই সশস্ত্র বাহিনীর অত্যাচারের শিকার হতো। ১৯৪৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সকাল ১০ টার দিকে বিরিশিরি থেকে ৪ মাইল উত্তর-পশ্চিমে বহেরাতলী গ্রামে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেল বাহিনীর একটি দল লংকেশ্বর হাজংএর বাড়িতে হানা দেয়।

টংক আন্দোলনের মাঠ পর্যায়ের নেতা লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর ভাইদের গ্রেফতার করাই ছিল সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশ্য। ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার বাহিনীর বহেরাতলীর দিকে আসার সংবাদ পেয়েই লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর তিন ভাই আত্নগোপন করে আড়াপাড়ায় মনি সিংহের গোপন আস্তানায় চলে যায়।লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর ভাইদের ধরতে না পেরে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেল বাহিনীর সশস্ত্র সেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে লংকেশ্বর হাজং এর সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে দেখে সশস্ত্র সেনারা লংকেশ্বর হাজং কোথায় আছে জানতে চায়। টংক আন্দোলনের নেত্রী কুমুদিনী হাজং সঠিক উত্তর না দিয়ে ‘”জানিনা” বলে জবাব দিয়ে দেন। এতে সেনারা আরো ক্ষিপ হয়ে উঠে। স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির কথা ও অশুভ ইঙ্গিত দিয়ে কুমুদিনী হাজংকে ধরে নিয়ে যায় বিরিশিরি সেনা ছাউনিতে। কুমুদিনী হাজং এর বাড়ির জনৈকা মহিলা পাশের বাড়িসহ অন্যান্য বাড়িতে দৌঁড়ে গিয়ে কুমুদিনী হাজংকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পৌঁছায়।

এ সংবাদ হাজং অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক হাজং নারী পুরুষ সশস্ত্র হয়ে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার বাহিনীর পথরোধ করে দাঁড়ায় ও কুমুদিনী হাজংকে ছেড়ে দিতে বলে। ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেল বাহিনীর সেনারা হাজং গ্রামবাসীর কথা কর্ণপাত না করে বিরিশিরির দিকে যেতে থাকে। গ্রামবাসীর মধ্য থেকে মধ্যবয়স্কা রাশিমনি নাম্নী এক হাজং মহিলার নেতৃত্বে দিস্তামনি হাজং, বাসন্তি হাজংসহ ১২ জনের এক মহিলা সশস্ত্র দল কুমুদিনী হাজংকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে সশস্ত্র সেনারা নৃশংসভাবে তাঁদের ওপর গুলি চালায়। এতে রাশিমনি হাজং গুলি বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ নৃশংস হত্যাকান্ড দেখে পেছনের পুরুষ দলের নেতা সুরেন্দ্র হাজং রাশিমনিকে ধরতে গেলে তাঁকেও নির্দয়ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় অন্যান্য হাজং নারী পুরুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং সশস্ত্র সেনাদের উপর বল্লম ও রামদা দিয়ে হামলা চালায়। তাঁদের হামলায় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেল বাহিনীর দু’সেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। বাকি সেনারা দৌঁড়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করে।কৃষক নারীদের মধ্যে শহীদ হিসেবে হাজং রাশিমনির নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হলো। ওই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সংজ্ঞাহীন কুমুদিনী হাজংকে গ্রামবাসীরা বহেরাতলীর অদূরে গভীর পাহাড় ঘেরা আড়াপাড়া অরণ্যে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহ-এর গোপন আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব থেকেই অবস্থান করছিলেন কুমুদিনী হাজং এর স্বামী ও ভাসুররা।

আড়াপাড়া আস্থানায় দীর্ঘ সময় শুশ্রষার পর সন্ধ্যায় কুমুদিনী হাজং জ্ঞান ফিরে পান।এ ঘটনায় সরকার হাজং অধ্যুষিত গ্রামগুলোর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অত্যাচারের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি সরকার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করে। মামলায় কমরেড মনি সিংহ, লংকেশ্বর হাজং তাঁর তিন ভাই ও কুমুদিনী হাজংসহ অনেক হাজং টংক আন্দোলনকারীকে আসামি করা হয়।সে সময় সুসং অঞ্চলের প্রায় সকল হাজং পরিবারকেই পুলিশের অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে ফেরারী জীবন যাপন করতে হয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Archive Calendar

এপ্রিল ২০২৫
সোম মঙ্গল বুধ বৃহঃ শুক্র শনি রবি
« মার্চ    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
 

©All rights reserved © Daily newsbangla24.