নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)’র বিরুদ্ধে। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি‘র) বাঁধায় কাজ বন্ধ করে পিছু হটে বিএসএফ। ওই এলাকায় বাড়িয়েছে বিজিবি‘র নজরদারি।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার ২নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে সীমান্তবর্তী উত্তেজনা বিরাজ করলেও সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ভবানীপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা দেশের মাটি রক্ষায় এলাকায় নজরদারী বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ৩১ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান (পিবিজিএম)।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ১১৫৬ নং সীমান্ত পিলারের কাছেই সীমানা আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য বিএসএফ‘র জওয়ানরা সীমান্তে এসে কাজ শুরু করে। এ সময় সীমান্ত এলাকায় বেড়া নির্মান করছে এমন খবর পেয়ে বিজিবি‘র জওয়ানরা ওই স্থানে অবস্থান করে তাঁদের নিষেধ করে। বিএসএফ পুনরায় ওই নিষেধ উপেক্ষা করে বেড়া নির্মানের চেস্টা করলে বিজিবি‘র সাথে সাথে এলাকাবাসীও তাঁদের দেশের মাটি রক্ষায় তীব্র প্রতিবাদ জানায়। সর্বস্তরের জোড়ালো প্রতিবাদ ও বিজিবি‘র পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদের মুখে ওই এলাকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয় বিএসএফ সদস্যরা।
ওই এলাকার কৃষক তোতা মিয়া বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই বিজিবি সদস্যদের সাহসী ভুমিকা নেয়ার জন্য। তবে আজকের এই পরিস্থিতির জন্য সীমান্তবর্তী রাস্তা ও ব্রীজ নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান কিছুটা দায়ী। প্রায় এক বছর ধরে রাস্তা নির্মান কাজ নিয়ে গড়িমশি শুরু করেছে। আমাদের দেশের রাস্তা ও ব্রীজের কাজ চলমান থাকায় ভারতের একটু রাস্তা ব্যবস্থার করতে হয় আমাদের। ওই চলাচল দেখে বিএসএফ প্রায় সবসময়ই গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে। আমাদের মুলরাস্তা নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় আমাদের চলাচল করতে হয় ভারতের ভিতর দিয়ে। আগত বর্ষার পুর্বেই রাস্তা নির্মান কাজ শেষ না করা হলে, দশ গ্রামের মানুষ ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়বে। রাস্তা নির্মান কাজ দ্রুত শেষ করতে কর্তৃপক্ষের দৃস্টি দেয়া জরুরী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবি সদস্য বলেন, বর্তমানে সেখানে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার সকালে হঠাৎ বিএসএফের একটি দল ওই সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য আসে। আইন অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্ত পিলার থেকে দেড়শ’ গজের মধ্যে ফসল চাষ ছাড়া স্থায়ী কোনো স্থাপনা কিংবা বেড়া দেয়ার কোন নিয়ম নাই। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা আন্তর্জাতিক আইন ভেঙ্গে বেড়া নির্মাণ করতে আসে। জানতে পেরে আমরা তাদের বাঁধা দেই। পরে আমাদের বাঁধার মুখে কাজ না করেই ফিরে যায় বিএসএফ সদস্যরা।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে রাস্তা নির্মান না হলে সহজেই এর সমাধান হবে না। ওই এলাকায় রাস্তা ও ব্রীজ নির্মান কাজে নদী থেকে বালি ব্যবহার নিয়ে একটু জটিলতা রয়েছে। সামনে বর্ষা আগত, ঠিকাদারের সাথে কথা বলে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা নির্মান করা যায় কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক বিজিবি‘র সদস্যদের প্রতিবাদের ফলে বেড়া স্থাপনের কাজ বন্ধ করেছে বিএসএফ। তবে বাংলাদেশ সীমান্তে রাস্তা ও ব্রীজ নির্মানের কাজ বন্ধ থাকায়, আমাদের দেশের মানুষ ভারত সীমান্ত দিয়ে চলাচল করে। দ্রুত রাস্তা নির্মান কাজ শেষ না করা হলে এ সমস্যা থেকেই যাবে। এ ব্যপারে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি
Leave a Reply