পিসি দাস গুপ্ত,স্টাফ রিপোর্টার:
এক সপ্তাহ ধরে সুনামগঞ্জ শহর এলাকার বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে কে হচ্ছেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক।
প্রশাসক নিয়োগ হবে এমন খবর প্রশাসনের দায়িত্বশীল পর্যায়ে কোন তথ্য নেই। একাধিক রাজনৈতিক কর্মী জানিয়েছেন, প্রশাসকের দায়িত্ব পাবার জন্য বর্তমান সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায়ে তদবির করছেন কেউ কেউ। আবার অনেকে তদবির না করলেও দায়িত্ব নিতে আগ্রহ রয়েছে বলে জানা গেছে। রবিবার পর্যন্ত সুনামগঞ্জ পৌরসভায় প্রশাসক পদে দায়িত্ব নিতে আগ্রহী ছয় বিএনপি নেতার নাম মুখে মুখে প্রচার করছেন তাদের শুভানুধ্যায়ীরা।
সীমান্ত শহর সুনামগঞ্জ। ২২.১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এটি। এই পৌরসভায় জনসংখ্যা ৮৭ হাজার ৫০০ জন। পাঁচ আগস্টে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর গেল ১৯ আগস্ট দেশের ৩৩০ পৌরসভার মেয়রকে অব্যাহিত দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এইসময় সুনামগঞ্জ পৗরসভার মেয়র নাদের বখ্তকে অব্যাহতি দিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে অন্যান্য পৌরসভার মত এই পৌরসভায়ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকই প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন।
গেল ৩০ অক্টোবর সচিবালয়ে সেক্রেটারিয়েট রিপোটার্স ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন,‘শীঘ্রই সিটি করপোরেশন পৌরসভায় নিয়োগ হচ্ছে ‘ফুলটাইম’ প্রশাসক। সেই থেকে এই পদ পেতে আগ্রহীরা তৎপর বা এই পদের যোগ্যদের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সুনামগঞ্জে গেল এক সপ্তাহ ধরে এই আলোচনা বেড়েছে।
প্রশাসকের আলোচনায় যাদের নাম বেশি আলেচিত হচ্ছে তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি, সুনামগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি, বর্তমান আহŸায়ক কমিটির সদস্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. শেরেনুর আলী। জেলা জাসাসের সভাপতিসুনামগঞ্জ পৌর কলেজের অধ্যক্ষ শেরগুল আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লা আল নোমান। জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির সদস্য, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং সুনামগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন সুজন, হাছন রাজার প্রপৌত্র বিএনপি নেতা সাজাউর রাজা চৌধুরী (সুমন রাজা) ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ আলম।

মরমি কবি হাছন রাজার আরেক প্রপৌত্র দেওয়ান গণিউল সালাদীনের নাম কেউ কেউ প্রচার দিলেও, সালাদীন এই প্রতিবেদককে বললেন- ‘অতীতে পৌরবাসী আমাকে ভোটে জয়ী করেছিলেন, কিন্তু আ.লীগের প্রার্থী সরকারি প্রভাব খাটিয়ে জনতার রায় ছিনিয়ে নেন, ওই সময় মানুষ প্রতিবাদও করতে পারেন নি। এখন সেই অবস্থা নেই। আমি মনোনীত হয়ে নয়, আবারও ভোটে লড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এদিকে, ‘ফুলটাইম’ পৌর প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা থাকলেও প্রশাসনের সিলেট ও সুনামগঞ্জের দায়িত্বশীলদের কাছে এই বিষয়ে কোন তথ্য নেই।
সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিত সিংহ বললেন, এই বিষয়ে কোন নির্দেশনা আমাদের এখনো দেওয়া হয় নি। একই মন্তব্য করলেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপির আহŸায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বললেন, সরকারিভাবে এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে, আমাদের দলের পক্ষ থেকে অফিসিয়েলি বা নন অফিসিয়েলি এই বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেওয়া হয় নি।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানালেন, প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে খসরা পর্যায়ে রয়েছে, তবে এই বিষয়ে কোন কার্যক্রম এখনো শুরু হয় নি।”
Leave a Reply